গতবছর সাংগঠনিক আয় কমে অর্ধেক হলেও ব্যয় বেড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
২০২২ পঞ্জিকা বছরে দলটি ১০ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টাকা আয় দেখিয়েছে। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৯ টাকা। তাতে উদ্বৃত্ত থেকেছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ১৮৯ টাকা।
আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান সোমবার ২০২২ পঞ্জিকা বছরের নিরীক্ষিত এই হিসাব প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন।
২০২১ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২১ কোটি ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬৬ টাকা, তহবিল থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছিল।
ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আওয়ামী লীগের তহবিলে স্থিতি ছিল ৭০ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার ১৬৬ টাকা। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৭৩ কোটি ২৮ লাখ ২১ হাজার ৩৫৫ টাকা হয়েছে জানিয়ে আশিক বলেন, “প্রতি বছর আমাদের উদ্বৃত্ত বাড়ছে।”
মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি, অনুদান ও সম্পত্তি থেকে আয় হচ্ছে দলের প্রধান আয়ের খাত। আর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা, সংগঠন পরিচালন ব্যয়, অফিস ভাড়া ও প্রকাশনা বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে আর্থিক প্রতিবেদনে।
মহামারীর প্রথম বছর ২০২০ সালে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৩ টাকা আয় দেখিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ টাকা।
২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২১ কোটি টাকা। আর তার আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছর ২০১৮ সালে ২৪ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছিল দলটি।
আওয়ামী লীগ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষিত হিসাব দিয়েছে জানিয়ে কোষাধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের হিসাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দিয়েছি। আয়-ব্যয়ে হিসাব স্বচ্ছ। উন্নয়ন বেশি হয়েছে, দিনে দিনে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। সামনে আশা করি, আমানত আরও বাড়বে। দলীয় কর্মকাণ্ডও বাড়ছে, খরচও বাড়ছে।”
ব্যয় বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, “মহামারীর তিন বছরে সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সীমিতভাবে ছিল। এখন বাইরের কর্মসূচি বেশি হচ্ছে, এতে দলের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।”
আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অডিট রিপোর্ট ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের কাছে জমা দেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েলও ছিলেন প্রতিনিধি দলে।
বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪২টি। আইন অনুযায়ী পর পর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা করিয়ে দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়।